সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি স্থাপনা নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেয়ার ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, ভিডিওটি মক্কা শরীফের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়ার। ভিডিওটি সামনে আসলে সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে নামে টিম চেক ফ্যাক্ট।
ভাইরাল ভিডিওঃ
২৯ আগষ্ট,২০২২ তারিখে Abhram Abhi নামের ফেসবুক আইডি থেকে ভিডিওটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়,
মক্কাশরীফে অবৈধ স্থাপনা কয়েক সেকেন্ডে গুড়িয়ে দেয়া হল!!
ফেসবুকে এমন দাবিতে আরো একটি পোস্ট দেখুন এখানে।
চেক ফ্যাক্ট অনুসন্ধানঃ
অনুসন্ধানের প্রথম ধাপে টিম চেক ফ্যাক্ট সম্প্রতি মক্কা শরীফে কোন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে কি না জানতে কী-ওয়ার্ড সার্চ করলে এমন কোন সংবাদ খুঁজে পায় নি। পরবর্তীতে ভিডিওটি থেকে বিভিন্ন ফ্রেমে ছবি সংগ্রহ করে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে News Beldanga - খবর বেলডাঙ্গা নামের একটি ফেসবুক পেজে ভাইরাল ভিডিওটি খুঁজে পাওয়া যায়। ২৮ আগষ্ট, ২০২২ তারিখে প্রকাশিত ভিডিওটির ক্যাপশনে বলা হয়,
অবশেষে ভাঙ্গা হল উত্তরপ্রদেশের নয়ডার বিতর্কিত জোড়া বিল্ডিং। এক বছর আগে সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয় এই অবৈধ নির্মাণ ভেঙ্গে ফেলার। প্রায় ৮০০কোটি টাকার নির্মাণ মাত্র কয়েক সেকেন্ডে ধূলিসাৎ হয়ে গেল, দেখুন ভিডিও
উল্লেখ্য, রিভার্স ইমেজ সার্চে প্রাপ্ত ভিডিওটির সাথে ভাইরাল ভিডিওটিএ সম্পুর্ণ সাদৃশ্যতা খুঁজে পাওয়া যায়।
পরবর্তীতে রিভার্স ইমেজে প্রাপ্ত ভিডিওটির ক্যাপশনের সূত্র ধরে রিভার্স ইমেজ সার্চ করা হলে, ভারতীয় গণমাধ্যম APB Ananda এর ভেরিফায়েড অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে ২৯ আগষ্ট সকালে একটি পোস্ট খুঁজে পায় যেখানে ভাইরাল ভিডিওটির ফুটেজ সহ একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। ক্যাপশনে বলা হয়,
৯ বছরের আইনি লড়াই শেষে ৯ সেকেন্ডেই মাটিতে মিশে গেল জোড়া অট্টালিকা। নয়ডার টুইন টাওয়ারের এই উত্থান-পতনে কতটা ক্ষতি হল পরিবেশের? পরিবেশবিদরা বলছেন, আরও সতর্কভাবে চালানো যেত ‘অপারেশন ডিনামাইট।
এছাড়া আরো কিছু ভারতীয় জাতীয় গণমাধ্যমে ভাইরাল ভিডিওটিকে দিল্লীর নয়ডার অবৈধ টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও বলে উল্লেখ করে। প্রতিবেদনগুলো দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
নয়ডার টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেওয়ার কারণ বিস্তারিত পড়ুন এখানে।
উপরোক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যে, ২০১৩ সালে কিছু আইন অমান্য করে ভারতের নয়ডায় সুপারটেক টুইন টাওয়ার নির্মান করা হলে মামলা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পরবর্তীতে ভারতের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে গত ২৮ আগষ্ট দুপুর ২.৩০ মিনিটে বিশেষ বিষ্ফোরকের সাহায্যে নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় এই অবৈধ স্থাপনা। ভারতের এই ভিডিওটিকেই সম্প্রতি মক্কাশরীফের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়ার ভিডিও বলা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। সুতরাং, মক্কাশরীফের অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয়ার দাবিতে ফেসবুকে প্রচারিত ভিডিওটি মিথ্যা। তাই সত্য জানুন, তারপর প্রচার করুন।
মন্তব্য (0)
দুঃখিত ! কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি