সম্প্রতি ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম ইউটিউবে একটি ভিডিও প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দাবিটি ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে এর সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে নামে টিম চেক ফ্যাক্ট।
ভাইরাল তথ্য
গত ০২ নভেম্বর Sabai Shiki নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিওটি আপলোড করে ক্যাপশনে লেখা হয়, "সকালেই মিছিল থেকে গ্রেফতার হলেন বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন"
উক্ত ইউটিউব ভিডিওটির লিংকযুক্ত ফেসবুকে প্রচারিত কিছু পোস্ট দেখুন এখানে, এখানে এবং এখানে।
চেক ফ্যাক্ট অনুসন্ধান
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিনা তা যাচাইয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই ভাইরাল ভিডিওটি পর্যবেক্ষণ করে টিম চেক ফ্যাক্ট। কয়েকটি খণ্ড খণ্ড ভিডিও ক্লিপ দিয়ে তৈরি আলোচিত ভিডিওর শুরুতে একজন সংবাদ পাঠিকাকে ইশরাক হোসেনের গ্রেপ্তারের খবর পড়তে দেখা যায়।
সংবাদ পাঠিকার খবর পড়ার অংশের কিছু স্থিরচিত্র রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল ‘বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ’ শীর্ষক শিরোনামে মূলধারার টেলিভিশন চ্যানেল আরটিভির ইউটিউব চ্যানেল প্রকাশিত একটি ভিডিও প্রতিবেদন খুঁজে পায় টিম চেক ফ্যাক্ট
উক্ত ভিডিও প্রতিবেদনের শুরুতে সংবাদ পাঠিকার পঠিত অংশের সাথে ইশরাক হোসেনের গ্রেপ্তার দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর প্রথম অংশের হুবহু মিল খুঁজে পাওয়া টিম চেক ফ্যাক্ট।
এছাড়া, আলোচিত ভিডিওতে ইশরাক হোসেনকে প্রিজনভ্যান থেকে পুলিশের ওপর উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে দেখা যায়। এই ভিডিওটিও ২০২২ সালের ৬ এপ্রিল ধারণকৃত বলে টিম চেক ফ্যাক্টের অনুসন্ধানের অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টার দাবি করে গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফী ওরফে মিয়া আরেফীকে ২৯ অক্টোবর গ্রেপ্তার পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মিথ্যা পরিচয় দিয়ে বিশ্বাস ভঙ্গ ও অপরাধমূলক কাজ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। গোপালগঞ্জ সদর থানার বাসিন্দা মহিউদ্দিন শিকদার এ মামলার বাদী। এই মামলায় আরেফী ছাড়াও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) হাসান সারওয়ার্দীকে আসামি করা হয়েছে। গত ৩১ অক্টোবর সারওয়ার্দীকেও এই মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ।
সুতরাং উপরোক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে এবিষয়টি স্পষ্ট যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উপদেষ্টা হিসেবে নিজেকে পরিচয় দিয়ে সরকারকে হুমকিমূলক বক্তব্য দেওয়া মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফি ওরফে মিয়ান আরেফির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করা হলেও তিনি এখনো গ্রেপ্তার হননি। অর্থাৎ, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের গ্রেপ্তার হওয়ার পুরোনো খবরের ভিডিও প্রচার করে তাকে সম্প্রতি গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে; যা মিথ্যা। তাই আগে সত্য জানুন, তারপর প্রচার করুন।
মন্তব্য (0)
দুঃখিত ! কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি