সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক কন্যাশিশুর ছবি ছড়িয়ে পড়েছে যেখানে দাবি করা হচ্ছে, ছবিটি ইসরায়েলের কারাগারে থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া শিশুর।কোন তথ্যসূত্র ছাড়াই উক্ত দাবিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে নামে টিম চেক ফ্যাক্ট।
ভাইরাল তথ্য:
গেল ২৫ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে শুভজিৎ ব্যানার্জি
নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়,
"ইসরাইলের কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া এক পরী।
জানিনা আমাদের উমর খালিদ, শারজিল ইমাম, গুলফিশা ফতিমা দের মুক্ত করার জন্য কোন পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। প্যালেস্টাইন থেকে বিশ্ববাসীর অনেক কিছু শেখার আছে।"
একই দাবিতে ফেসবুকে আরো কিছু পোস্ট দেখুন এখানে এবং এখানে।
চেক ফ্যাক্ট অনুসন্ধান:
ছবির শিশুটিকে আসলেই ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেপ্তার করেছিল কিনা তা যাচাইয়ে অনুসন্ধানের শুরুতেই ভাইরাল ছবির শিশুর পরিচয় জানার চেষ্টা করে।
ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চের মাধ্যমে গত ২৫ নভেম্বর “Reem Al-Harmi ريم الحرمي” নামের একটি এক্স অ্যাকাউন্টে প্রকাশিত পোস্টে আলোচিত শিশুর ছবিটি খুঁজে পাওয়া যায়।
পোস্টটির ক্যাপশনে বলা হয়, ছবির শিশুটি ইসরায়েলি বাহিনীর কাছে বন্দি ফাতিমা শাহীনের (৩৩) কন্যা। তার মায়ের কারামুক্তি উপলক্ষে সে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষা করছে। ছবিটি সেই মুহূর্তেই ধারণ করা।
উক্ত তথ্যের সূত্র ধরে প্রাসঙ্গিক কি ওয়ার্ড সার্চের মাধ্যমে গত ২৫ নভেম্বর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের ওয়েবসাইটে "Hair, makeup and hopefully a sister back home: Palestinians await prisoner release" শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন খুঁজে পায় টিম চেক ফ্যাক্ট।
উক্ত প্রতিবেদনে ফিচারে ব্যবহৃত ছবিতে আলোচিত শিশুটিকে দেখা যায়। উক্ত ছবির ক্যাপশনে বলা হয়, এই ছবিটি ফাতিমা ইজরায়লি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর তোলা হয়েছে যেখানে ফাতিমাকে তার কন্যার সঙ্গে দেখা যাচ্ছে। এছাড়া উক্ত ক্যাপশনে শিশুটির নাম আইলুল শাহীন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া উক্ত বিষয়ে মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক গণমাধ্যম Khaleej Times এ প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে একই তথ্য জানা যায়।
অর্থাৎ, উপরোক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যে, ছবির শিশুটি আইলুল শাহীনকে নয় বরং তার মা ফাতিমা শাহীনকে ইসরায়েলি বাহিনী গ্রেপ্তার করেছিল।
সম্প্রতি শিশু আইলুলের বন্দি মায়ের কারামুক্তির সংবাদে কারাগারের বাহিরে অপেক্ষারত থাকা অবস্থায় ধারণ করা উক্ত ছবিটিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ইসরায়েলের কারাগারে থেকে সদ্য মুক্তি পাওয়া শিশুর ছবি দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে, যা সঠিক নয়। তাই সত্য জানুন, তারপর প্রচার করুন।
মন্তব্য (0)
দুঃখিত ! কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি