২০২৩ শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক স্তরে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেনীতে ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ নামে নতুন পাঠ্যবই প্রণয়ণ করা হয়েছে। নরবলি, সতীদাহ, নগরবধু, গুরুপ্রসাদী, অঘোরি সাধু সমাজ নামের কিছু বিষয়বস্তু এবং তার সাথে সংশ্লিষ্ট ছবি এই বইগুলোতে প্রকাশ করা হয়েছে বলে সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। বিষয়টি সামনে আসার পর সত্যতা যাচাইয়ে অনুসন্ধানে নামে টিম চেক ফ্যাক্ট।
ভাইরাল তথ্যঃ
১৬ জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে Fayaz Ullah Sojol নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে বেশ কিছু ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়। যেখানে লেখা ছিলো, স্কুলের নতুন পাঠ্য বই নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষ করে নিম্ন মাধ্যমিকে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনীর ইতিহাস ও সমাজ বই নিয়ে বিতর্ক বেশি হচ্ছে ।
পোস্টের ছবিগুলোতে দেখা যায়, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে নরবলি , সতীদাহ, নগরবধু, গুরুপ্রসাদী ইত্যাদির বিষয়ে লেখা আছে। যদিও এটি কোন শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই তা ছবিতে উল্লেখ করা হয় নি।
চেক ফ্যাক্ট অনুসন্ধানঃ
অনুসন্ধানের প্রথম ধাপে টিম চেক ফ্যাক্ট ২০২৩ সালের ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বই দুইটির অনলাইন ভার্সন খুঁজে বের করে বই দুটিকে বারংবার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ভাইরাল ছবিগুলো বইয়ের কোন অংশে আছে তা খুঁজে বের করার চেস্টা করে। পর্যবেক্ষণে দেখা যায় যে, বইয়ের কোন অংশেই ভাইরাল ছবিগুলো বা বিষয়বস্তুগুলোর কোন উপস্থিতি নেই।
পরবর্তীতে ভাইরাল ছবিগুলোর উৎপত্তি খুঁজে পেতে গুগলে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে সহমত ভাই 0.2 নামের একটি ফেসবুক পেজে ছবিগুলো খুঁজে পাওয়া যায়। যেখানে ৪জানুয়ারি, ২০২২ তারিখে প্রকাশিত পোস্টের ক্যাপশনে বলা হয়,
আমাদের অসাম্প্রদায়িক প্রগতিরা সপ্তম শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইতে যেসকল ইতিহাস তুলে ধরতে ভুলে গেছেন
এখানে সপ্তম শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের বিষয়বস্তুগুলোকে ব্যঙ্গাত্নকভাবে প্রকাশের জন্য ছবিগুলো ব্যবহার করে পোস্টটি করা হয়েছে। অর্থাৎ পোস্টটি একটি স্যাটায়ার পোস্ট । এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে ছবিগুলো সপ্তম শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের নয় বরং ছবিগুলোকে এডিট করে ব্যঙ্গাত্নকভাবে প্রচার করা হয়েছে।
উপরোক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে বলা যায় যে, নরবলি, সতীদাহ, নগরবধু, গুরুপ্রসাদী, অঘোরি সাধু সমাজ নামের বিষয়বস্তুগুলো ৭ম শ্রেনীর শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের নয়। এটি একটি স্যাটায়ার পোস্ট হিসেবে ফেসবুকে প্রকাশ করা হলে অনেকেই এটিকে সপ্তম শ্রেনীর ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের দাবিতে প্রচার করতে থাকে, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাই সত্য জানুন, তারপর প্রচার করুন।
মন্তব্য (0)
দুঃখিত ! কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি